মন যখন বসন্ত
-রমলা মুখার্জী
এই ছেলেটা প্রেমের কাজল পরিয়েছিস দু চোখে
তোর জন্যে লালের ছটা আমার সারা মুখে।
বুকের মাঝে তির্ তির্ তির্ পুলক সারা গায়
শরীর মনে পাগল আমি কেবল তোকে চায়।
এই ছেলেটা তুই যে আমার অতল সমুদ্দুর
উথাল পাথাল ঢেউএর দোলায় গুনগুনিয়ে সুর।
সেই সুরেতে ডানা মেলে মন-মাঝি উদাস
তুই ও আমি দুজনাতে তেঁতুল-পাতায় বাস।
এই ছেলেটা তোর সঙ্গে ছেড়েছি বাপের ঘর
হিঁদুর মেয়ের হয়েছিস তুই মুসলমানী বর।
যে যা বলে বলুক লোকে পরোয়া করি না
আয়লা সুনামী ভূমিকম্পেও ভয়ে ডরি না।
এই ছেলেটা দেখ না চেয়ে মা দিয়েছেন চিঠি
কত দিন পরে ছোঁব ওরে নিজের গাঁয়ের মাটি।
যে মাটিতে লালন-পালন সেকি ভোলা যায়
দু বাবা-মাই বিবাদ ভুলে বলছে, চলে আয়।
এই ছেলেটা তোর সঙ্গে চল না গ্রামে যাই
আম-জাম-আতার বনে নতুন করে পাই।
দিঘির জলে পা ডুবিয়ে বসবো দুজনায়-
ভালবাসা এঁকে দেব প্রজাপতির ডানায়।
এই ছেলেটা তোর সঙ্গে নদী হব পার…….
লাগলে কাদা মুছে নেব, মানবো না তো হার
গাছের ডালে পা দুলিয়ে শুনবো পাখির কুজন
ছোট্ট একটা ডিঙির ওপর শুধু আমরা দুজন।
এই ছেলেটা ভয় নেই রে নতুন আলোর মুখ
সবাই মিলে মিশে গেছি সেই তো আসল সুখ।
কাঁটার বেড়া ডিঙিয়ে ভেঙে এগিয়ে অনেক যাই…….
হিন্দু আর মুসলমানে আলাদা কিছু তো নাই।